Breaking

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

07 September 2022

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী ! A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali

 এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী ! A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali


.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali :

  • .পি.জেআবদুল কালাম এর পুরো নাম হলো- আভুল পকির জয়নুলাবেদীন আব্দুল কালাম  

এক কথায় এ.পি.জে আবদুল কালাম কে চেনে না এমন ব্যক্তি খুব কম জন ই আছে । তিনি হলেন আমাদের দেশের একজন অগ্নিপুরুষ ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি .পি.জে. আবদুল কালামকে মিশাইলম্যান বলা হয়ে থাকে
    • জন্ম                                        ::      ১৯৩১ সালের  ১৫  ই অক্টোবর
    • জন্মস্থান                               ::     ভারতবর্ষের তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে
    • পিতা                                       ::     জয়নুল আবেদিন
    • মাতা                                       ::      অশিয়াম্মা
    • ধর্ম                                          ::     ইসলাম
    • জীবিকা                                ::     লেখক / বিমান প্রযুক্তিবিদ
    • কাজের সময় কাল           ::     ২০০২২০০৭
    • মৃত্যু                                         ::     ২৭ জুলাই ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই
    • মৃত্যুর কারণ                        ::    হৃদরোগ

আবুল
পাকির জয়নুলাবিদিন আব্দুল কালাম 15 অক্টোবর 1931 সালে তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে 
একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা জয়নুল আবেদিন ছিলেন পেশায় মৎসজীবি এবং মা আশিয়াম্মা ছিলেন একজন গৃহিণী। তার পরিবারের ছিল তিন ভাই ও এক বোন  । তার পিতা জয়নুল আবেদিন  খুব বেশী শিক্ষিত মানুষ ছিলেন না  । তবে মনের দিক থেকে খুবই বড়োমাপের মানুষ ছিলেন   তিনি ছোটবেলা থেকে পুত্র আবদুলের মনের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন বারবার তিনি গল্পছলে আবদুলকে বলতেন পরবর্তী কালে তুমি যেন মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠতে পারে তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না, তাই তাকে কাজ করতে হয়েছিল ছোটবেলা থেকেই বাবাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য কালাম স্কুলের পর অবসর সময়ে সংবাদপত্র বিতরণের কাজ করতেন। স্কুলের সময়ে, কালাম পড়াশোনায় খুব ভালোভাবে করতেন  কিন্তু নতুন জিনিস শেখার জন্য সবসময় বেশি আগ্রহী  থাকতেন।
 তিনি মুসলিম পরিবারে হওয়া সত্ত্বেও সকল হিন্দু বন্ধুদের সঙ্গে তিনি খেলা ধুলো করতেন  মেলামেশা করতেন রামনাথ শাস্ত্রী , অরবিন্দন আর শিব প্রকাশনের সঙ্গে , তাঁরা সকলেই ছিলেন  হিন্দু পরিবারের সন্তান আর আবদুল ছিলেন মুসলমান পরিবারের সন্তান কিন্তু তাদের মধ্যে শৈশবে তাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার ভেদ রেখা ছিল না তখন তাঁরা সকলেই একসঙ্গে মেলামেশা করতেন  

শিক্ষাজীবন :: 


পিতা ছিলেন বিদ্যানুরাগী তাঁর পিতা  সংস্কৃত সাহিত্যের গল্পকথা আবদুলকে শোনাতেন মা ঠাকুরমার মুখ থেকে আবদুল রামায়ণ এবং মহাভারতের অনেক কাহিনীও শুনেছিলেন   তার শেখার ক্ষুধা ছিল   প্রবল  তিনি ঘন্টার পর ঘন্টা পড়াশোনায় মনোনিবেশ থাকতেন। তিনি ভর্তি হলেন রামেশ্বরম এলিমেন্টরি স্কুলে   
এবার কালাম এলেন বৃহত্তর শিক্ষাঅঙ্গনে ভর্তি হলেন স্টুওয়াজ হাইস্কুলে তার দেখা হতো না আর  ছোটোবেলার সঙ্গী সাথীদের সাথে  কালাম তখন উপলব্ধি করলেন যে সেই শাশ্বত সত্য জীবনে চলার পথে এভাবেই আমরা একলা পথিক হয়ে যাই এই হাইস্কুলের অনেকের কথাই মনে পড়ে  তিনি কখনো ভুলতে পারবেন না ওখানকার শিক্ষক ইয়াদুরাই সলোমনকে   তাকে দেখে কিশোর কালামের মনে হত , তিনি বোধহয় বৈদিক যুগের এক ব্রহ্মচারী ছাত্রের জীবন অন্বেষণার কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন
ছোটোবেলা থেকেই  বিজ্ঞানের এক অসাধারণ প্রভাবশালী ছাত্র ছিলেন । স্কুলের পরীক্ষাতে বরাবর কৃতিত্বের সাথে পাশ করেছেন । তিরুচিরাপল্লির সেন্ট জোসেফ কলেজে যোগ দেনযেখান থেকে তিনি 1954 সালে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হন। এর পরে 1955 সালেতিনি মাদ্রাজ চলে যান যেখানে তিনি মহাকাশ প্রকৌশল অধ্যয়ন করেন। 1960 সালেকালাম মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে তার ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়ন শেষ করেন। 
 শিক্ষক ইয়াদুরাই সলোমন কালামকে তিনটি মূল মন্ত্র শিখিয়েছিলেন  জীবনে বড় হওয়ার জন্য
সেটা হল - ইচ্ছা , বিশ্বাস এবং আশাবাদ । 
  • যদি মনের মধ্যে ইচ্ছা থাকে তাহলে আমরা সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারবো । 
  • দ্বিতীয়  হল বিশ্বাস নিজের কর্তব্যবোধের ওপর অবিচল আস্থা থাকতে হবে ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস এবং নির্ভরতা রাখতে হবে।
  • সর্বশেষ  আশাবাদ জেগে ওঠে আশাবাদ না থাকলে অরণ্যচারী মানুষ আজ মহাকাশ বিজয়ী হতে পারতনা

কর্মজীবন ::

তিনি  ১৯৬০ সালে  ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনে ( ডি আর ডি )  বিজ্ঞানী হিসেবে যোগ দেন   তার  কেরিয়ার শুরু হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছোট মাপের একটি হেলিকপ্টারের নকশা করার মধ্য দিয়ে   ভারতের মহাকাশ গবেষণার সংস্থা ইসরো সঙ্গে যুক্ত হন তিনি  তিনি  দেশীয় প্রযুক্তিতে উন্নত সামরিক মিসাইল তৈরির প্রকল্পে  ছিলেন মহাকাশযান স্যাটেলাইট বহনকারী পি এস এল ভি এবং এস এল ভি থ্রি রকেট তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ভারতেরমিসাইল ম্যানবলা হয় তাঁকে পরমাণু শক্তিধর দেশগুলির সঙ্গে একই সারিতে ভারতকে তুলে আনার জন্য তাঁর অবদান অনস্বীকার্য  তিনি   পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা সংক্রান্তপোখরানটুপ্রকল্পের চিফ প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর ছিলেন  

 তিনি নিজেকে দেশের প্রথম সারির বিজ্ঞানী হিসাবে  প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ করা রাষ্ট্রপতির পদে দাঁড়ানো এবং সেই পদে নির্বাচিত হওয়া রাষ্ট্রপতি হিসাবে বিভিন্ন বিতর্কমূলক কাজে জড়িয়ে পড়া নিজেকে রাজনৈতিক দলাদলির উর্দ্ধে রাখা , এমন অনেক আদর্শ স্থানীয় কাজ করে আজ কালাম আমাদের কাছে এক মহান মানুষে পরিণত হয়েছেন আজও মাঝে মাঝে তিনি বিভিন্ন জায়গাতে ভাষণ দিতে যান যেখানেই যান , সেখানেই তাঁর শিক্ষকসুলভ দার্শনিকতা প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে । সব অর্থে কালামকে আমরা এক ভারতীয় ঋষির সঙ্গে তুলনা করতে পারি  জীবনে তিনি দ্বার পরিগ্রহ করেননি  আজীবন ব্রহ্মচারী তাপসের মতো জীবন কাটিয়েছেন  তাই তাঁর প্রতি আমরা আমাদের অস্তরের সশ্রদ্ধ প্রণাম নিবেদন করি আমরা অবশ্যই .পি.জে.আবদুল কালামকে ভারতীয় সংস্কৃতির ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব হিসাবে  চিহ্নিত করব 

 .পি.জেআবদুল কালাম  ২০০২  সালে তৎকালীন শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি  বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থনে ভারতের একাদশতম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন  । পাঁচ বছর এই পদে আসীন থাকার পর .পি.জে. আবদুল কালাম  শিক্ষাবিদ, লেখক জনসেবকের সাধারণ জীবন বেছে নেন। .পি.জেআবদুল কালাম ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্নসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মান পুরস্কার পেয়েছিলেন   .পি.জেআবদুল কালাম  ২০০২-২০০৭ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন পরে .পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) শিলং আই আই এম ভিজিটিং প্রফেসর হন 


আত্মজীবনী ::  ১৯৯০ সালে প্রকাশিত হয় .পি.জেআবদুল কালাম এর  আত্মজীবনী—          “ উইঙ্গস অফ ফায়ার ” 


পুরস্কার: 

  •   তিনি 1981 সালে  বিজ্ঞানের  সাফল্য অর্জনের জন্য  পদ্মভূষণ এবং 1990 সালে পদ্মবিভূষণে সম্মানিত হন।
  •  তিনি 1997 সালে  প্রতিরক্ষা গবেষণার ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ অবদানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্ন লাভ করেন।
  • জাতীয় সংহতির জন্য 1998 সালে  ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার পান
  •  আবদুল কালামকে 1998 সালে রয়্যাল সোসাইটি, যুক্তরাজ্য কর্তৃক কিং চার্লস দ্বিতীয় পদক প্রদান করা হয়।
  •  আব্দুল কালাম জি বিশ্বের 40 টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেছেন।
  •   2011 সালে, আবদুল কালাম   IEEE সম্মানিত সদস্যপদে IEEE দ্বারা সম্মানিত করা হয়েছিল।

রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষে, আব্দুল কালাম IIM শিলং, IIM আহমেদাবাদ, IIM ইন্দোর, IIS ব্যাঙ্গালোর এবং অন্যান্য কলেজে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। 2012 সালে, ভারতীয় যুবকদের জন্য "আমি কি দিতে পারি আন্দোলন" একটি প্রোগ্রাম শুরু হয়েছিল, যার লক্ষ্য ভারতে দুর্নীতিকে পরাস্ত করা।


ডাঃ .পি.জেআবদুল কালামের চিন্তাধারা :

  •  মানুষের অসুবিধা প্রয়োজনকারণ সাফল্য উপভোগ করা প্রয়োজন।
  • আমার জন্য নেতিবাচক অভিজ্ঞতা বলে কিছু নেই।
  •  জীবন এবং সময় পৃথিবীর দুই শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। জীবন আমাদের সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে শেখায় যেখানে সময় আমাদের জীবনের উপযোগিতা বলে।
  • আমি সবসময় মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলাম যে আমি কিছু জিনিস পরিবর্তন করতে পারি না।
  •   প্রশ্ন করা সমস্ত ছাত্রদের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি। তাই শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করুন।
  •  আমরা  যখন দৈনন্দিন সমস্যা দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকিতখন আমরা আমাদের মধ্যে থাকা ভাল জিনিসগুলি ভুলে যাই।
  • আমাদের চেষ্টা কখনই বন্ধ করা উচিত নয় এবং সমস্যাগুলির সমাধান করার চেষ্টা করা উচিত

মৃত্যু :: 

.পি.জেআবদুল কালাম ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই  সন্ধে সাড়ে ছটায় শিলংয়ের আই আই এমের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় মঞ্চের ওপরেই পড়ে যান .পি.জে. আবদুল কালামকে (A.P.J. Abdul Kalam) স্থানীয় বেথানি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সেখানেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। 






No comments:

Post a Comment

× close ad

Join Our Group

Join Telegram